Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Youtstory

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

ADVERTISEMENT
Advertise with us

দারিদ্রকে হারিয়ে উঠে এসেছেন ক্রিকেটার সিরাজ

দারিদ্রকে হারিয়ে উঠে এসেছেন ক্রিকেটার সিরাজ

Monday November 06, 2017 , 3 min Read

মা শাবানা বেগম ঘর সামলান আর বাবা মহম্মদ গাউস অটো রিক্সা চালান। চারজনের সংসারে ওই অটো রিক্সাই অন্ন সংস্থানের একমাত্র ভরসা। বড় ছেলের পড়া আর ছোট ছেলের খেলা চালাতে গিয়ে হিমসিম খেলেও কখনোই দুই ছেলেকে অর্থকষ্ট বুঝতে দেননি বাবা মহম্মদ গাউস। ছোট ছেলের ক্রিকেটে আগ্রহ বুঝতে পারলেও অর্থাভাবে ভালো প্রশিক্ষকের কাছে পাঠাতে পারেননি। অন্য পাঁচটা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মতো সিরাজের খেলা শুরু টেনিস বলেই। নিজেই নিজের কোচ। যা শিখেছেন কুড়িয়ে বাড়িয়ে শিখেছেন। ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে পাঠানোর পয়সা ছিল না বাবার। তাই পুরনো স্মৃতি কষ্ট নয় অনুপ্রেরণা দেয় সিরাজকে। মহম্মদ সিরাজ। আইপিএলে নিলামে হায়দরাবাদি এই ডানহাতি পেসারকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। শুধু আইপিএল নয়, জাতীয় দলেও শিকে ছিঁড়েছে সিরাজের। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ তে ভারতীয় দলের ১৬ জনের স্কোয়াডে ঢুকে পড়েছেন।

image


লক্ষ্য স্থির ছিল, তাই সাফল্য আসতে বেশি সময় লাগেনি। হায়দরাবাদ অনুর্ধ্ব২৩ দলে নির্বাচিত হওয়া, কিছু স্থানীয় ক্লাব টুর্নামেন্ট এবং ২০১৫—১৬ সিজনে রঞ্জিতে অভিষেক। আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। টাকার অঙ্কটা বড় হলেও সিরাজকে নিয়ে আইপিএল নিলামের টানাটানিটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। গত মৌসুমটি বল হাতে দুর্দান্ত কাটিয়েছেন। ৪০টি উইকেট তাঁর শিকারে। হায়দরাবাদের অনুর্ধ্ব-২২ দল দিয়ে শুরু। এরপর হায়দরাবাদের হয়ে মুশতাক আলি ট্রফি, বিজয় হাজারে ট্রফি ও রঞ্জি ট্রফিতে খেলে জায়গা করে নিয়েছেন ভারতের ‘এ’ দলে। তখনও জানতেন না কত বড় বিস্ময় অপেক্ষা করছে তাঁর জন্যে। মহম্মদ সিরাজের পৃথিবীটা এক লহমায় বদলে গেল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হায়দরাবাদের ক্রিকেটারটি হয়ে গেলেন কোটিপতি। ২০ লক্ষ টাকা বেস প্রাইসের সিরাজকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২.৬ কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নিয়ে নেয়। সেই ঘোর কাটিয়ে উঠতে খানিক্ষণ সময় লেগেছিল, বলেন সিরাজ। তবে সবচেয়ে বড় পাওনা জাতীয় দলের নীল জার্সি।

সিরাজদের পরিবার থেকে এরই মধ্যে অবশ্য ‘অভাব’ শব্দটার ছুটি হয়ে গেছে। বড় দাদা নামী কোম্পানির সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। ক্রিকেটার হিসেবে এরই মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সিরাজও বাবার ভার অনেকটাই লাঘব করেছেন। ‘আমার বাবা-মাকে অনেক কঠিন দিন দেখতে হয়েছে। হাড়ভাঙ্গা কষ্ট করে সারাটা দিন অটো চালালেও আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। যখন যা প্রয়োজন কিনে দিয়েছেন। স্পাইকওয়ালা বোলিং জুতো অনেক দামি। কিন্তু বাবা আমার জন্য সবচেয়ে দামি বোলিং জুতোই কিনে এনেছেন। সেকথা কি ভোলা যায়?’, কথায় কাথায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে টি২০ টিমের পেসার। স্মৃতিতে ভিড় করে আসে কত পুরনো ঘটনা। ‘একটা ক্লাব ম্যাচ ছিল। আমার মামা দলের অধিনায়ক। ২৫ ওভারের ম্যাচ। আমি ২০ রানের বিনিময়ে ৯টি উইকেট নিয়েছিলাম। আমার পারফর্মেন্সে মামা খুশি হয়ে পাঁচশ টাকা উপহার দিয়েছিলেন’, সেই সব দিনের কথা মনে পড়লে চোখ ভিজে ওঠে সিরাজের।

সিরাজের আদর্শ ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক। ভারত ‘এ’ আর অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর নায়কের সঙ্গে সামনা-সামনি কথা বলার সুযোগও হয়েছিল। সিরাজের প্রধান অস্ত্র ইনসুইং ও বাউন্সার। ইয়র্কারটাও রপ্ত করেছেন আইপিএলের আগে। কী ভাবে ইয়র্কার আরও নিখুঁত করতে হবে, জানতে চেয়েছিলেন স্টার্কের কাছে। স্টার্ক উপদেশও দিয়েছেন। আইপিএলে অবশ্য স্টার্কের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ হয়নি। কারণ, স্টার্ক আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন টুর্নামেন্ট থেকে। আইপিএলে হায়দরাবাদ সানরাইজার্সের ড্রেসিংরুমে ভিভিভিএস লক্ষ্মণ ও ডেভিড ওয়ার্নারের মতো ক্রিকেটারের সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। ‘লক্ষ্মণ স্যার (ভিভিএস লক্ষ্মণ) আর অরুণ স্যার (ভরত অরুণ)আমাকে দারুনভাবে গাইড করেছেন। অরুণ স্যারের টেকনিক অসাধারণ। ওর কাছ থেকে অনেক ভেরিয়েশন শিখেছি’, জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই কৃতজ্ঞতা ঝড়ে পড়ে সিরাজের গলায়। ‘ইন্ডিয়া ‘এ’ টিমে খেলার সময় রাহুল স্যা রের (রাহুল দ্রাবিড়) কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। উনি নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। সেগুলিই প্রতি পদে কাজে লাগছে’, বলেন দ্রাবিড়ে মুগ্ধ ভারতীয় ক্রিকেটার। আইপিএল খেলার পর বাবা মাকে কথা দিয়েছিলেন নতুন বাড়ি কিনে দেবেন। কথা রেখেছেন ছেলে। ‘বাবাকে বলেছিলাম তোমাকে আর কাজ করতে হবে না। এবার বিশ্রাম নাও। এত কষ্ট করেছেন আমাদের জন্য । নতুন বাড়ি কিনে দেব বলেছিলাম। তাও কিনেছি’, বেশ তৃপ্ত শোনায় সিরাজের গলা।